Calendar |
---|
« January 2013 » |
Su |
Mo |
Tu |
We |
Th |
Fr |
Sa |
| | 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 | 30 | 31 | |
Statistics |
---|
Total online: 2 Guests: 2 Users: 0 |
|
Blog
Main » 2013 » January » 01 » ইসলাম হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যাবস্থা। অনেক মুসলিম ভাইবোন আছেন যাদের কুর'আন ও হাদিসের জ্ঞান খুব বেশি নেই বলে তারা ইসলামের অনেক বিষয়েই দিধ
5:06 AM ইসলাম হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যাবস্থা। অনেক মুসলিম ভাইবোন আছেন যাদের কুর'আন ও হাদিসের জ্ঞান খুব বেশি নেই বলে তারা ইসলামের অনেক বিষয়েই দিধ |
ইসলাম হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যাবস্থা। অনেক মুসলিম ভাইবোন আছেন যাদের কুর'আন ও হাদিসের জ্ঞান খুব বেশি নেই বলে তারা ইসলামের অনেক বিষয়েই দিধাগ্রস্থ ও বিভ্রান্ত। আমরা সবাই যদি একটু চেষ্টা করি তাহলে দীন ইসলাম শিক্ষা করা আল্লাহ পাক আমাদের জন্য সহজ করে দেবেন ইনশাআল্লাহ।
শুরুতেই একটি কথা স্পষ্টভাবে বলছি, আমি আল্লাহ্ তা'আলার জন্য ইসলামের চারজন ইমামদেরকে অন্তর থেকে ভালবাসি ও শ্রদ্ধা করি। কাজেই কারও বিভ...্রান্ত হবার কোন কারন নেই এই ভেবে যে, এখানে ইমামদেরকে অশ্রদ্ধা বা খাট করে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে।
একটি সহজ কথা আমরা যেন ভুলে না যাই। আমাদের জন্য কোন আমল বা কাজটি ফরয তা কুরআন ও হাদিসে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা আছে। এর বাইরে কোন ব্যক্তির পক্ষে আরও কোন বিষয়ে বা আমল ফরয বলার কোন অধিকার নেই।
"বেশ কিছু মানুষ বলে" মাজহাব মানা ওয়াজিব বা ফরজ। । যাক আসুন মূল কথায় যাই।
=> আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর সাথে সব সময় সব সাহাবী থাকতেন না। কেউ নবীর (সাঃ) থেকে একটা হাদিসের বাণী শুনলে সেটা পৌছে দিতেন অন্যের নিকট। যেমন আবু হুরাইরা রাঃ নবীজি (সাঃ) এর অনেক বাণী পৌছে দিয়েছেন অন্যান্য সাহাবীদের নিকট। যেমন বিদায় হজ্বের সময় ১ লাখেরও বেশী সাহাবী ভাষন শ্রবণ করেছেন। পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে গিয়েছেন।
=> ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) জন্ম গ্রহণ করেছেন ৮০ হিজরীতে। তিনি প্রাপ্ত বয়স্ক হবার পর যতগুলো হাদিস পেয়েছেন এবং সংরক্ষণ করেছেন সেগুলোর উপর ভিত্তি করেই ফতোয়া দিয়েছিলেন। একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, উনার সময় তিনিই ছিলেন ইমামে আজম। তবে যেহেতু তিনি সকল সাহাবাদের হাদিস সংগ্রহ করতে পারেন নাই, সকল সাহাবাদের সাক্ষাত পান নাই এবং যেহেতু হাদিস এর ধারক সাহাবারা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন তাই তিনি যতগুলো হাদিস পেয়েছেন তার উপরেই ফতোয়া দিয়েছেন।
তবে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মূল কথা ছিলঃ-
"ইযা সহহাল হাদিসু ফা হুয়া মাজহাবা" অর্থ্যাত বিশুদ্ধ হাদিস পেলে সেটাই আমার মাজহাব বা মতামত। (১/৬৩ ইবনু আবিদীন এর হাশিয়া, পৃঃ ৬২ ছালিহ আল-ফাল্লানীর, ১/৪৬ শামী)
ইমাম আবু হানিফাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল হে শায়খ, যদি এমন সময় আসে যখন আপনার কথা কোন সহীহ হাদিসের বিপরীতে যাবে তখন আমরা কি করব?
তিনি উত্তরে বলেছিলেন, তখন তোমরা সেই সহীহ হাদিসের উপরই আমল করবে এবং আমার কথা প্রাচীরে/দেয়ালে নিক্ষেপ করবে।
=> ১৩৫ হিজরিতে জন্মগ্রহন কারী ইমাম শাফেঈ (রহঃ) এর বক্তব্য হলো,
তোমরা যখন আমার কিতাবে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সুন্নাহ বিরোধী কিছূ পাবে তখন আল্লাহর রাসুলের সুন্নাত অনুসারে কথা বলবে। আর আমি যা বলেছি তা ছেড়ে দিবে। (৩/৪৭/১ আল হারাবীর, ৮/২ খত্বীব, ১৫/৯/১ ইবনু আসাকির, ২/৩৬৮ ইবনু কাইয়িম, ১০০ পৃঃ ইহসান ইবনু হিব্বান)।
=> ৯৩ হিজরীতে জন্মগ্রহণ কারী ইমাম মালেক রহঃ এর বক্তব্যও একই।
ইমাম মালেক বিন আনাস (রহঃ) বলেছেন, আমি নিছক একজন মানুষ। ভূলও করি শুদ্ধও বলি। তাই তোমরা লক্ষ্য করো আমার অভিমত/মতামত/মাজহাব এর প্রতি। এগুলোর যতটুকু কোরআন ও সুন্নাহ এর সাথে মিলে যায় তা গ্রহণ করো আর যতটুকু এতদুভয়ের সাথে গরমিল হয় তা পরিত্যাগ করো। (ইবনু আবদিল বর গ্রন্থ (২/৩২)।
=> ১৬৪ হিজরীতে জন্মগ্রহনকারী ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ ছিলেন ১০ লক্ষ হাদিসের সংগ্রহ কারী। সবচেয়ে বেশী হাদিস উনার মুখস্থ ছিল এবং উনার সংগ্রহে ছিল। উনার লিখিত গ্রন্থ মুসনাদে আহমাদ এ মাত্র ২৩০০০ এর মতো হাদিস লিপিবদ্ধ আছে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, সকল ইমামই কোরআন ও সহীহ হাদিস মেতে নিতে বলেছেন। কিন্তু কেউ যদি বলেন মাজহাব মানতে তাহলে এই মুসলিম জাতি কখনো এক হতে পারবে না। সকলে দলে দলে বিভক্ত হয়ে যাবে। যেমন হানাফী, শাফেঈ, হাম্বলী, মালেকী, আহলে হাদিস, আহলে কোরআন, শিয়া, সুন্নী, কুর্দি, দেওবন্দী, বেরলভী ইত্যাদি।
উপরের যতগুলো গ্রুপে মুসলিমরা ভাগ হইছে তার একটাই কারণ মাজহাব বা মতামতকে তাকলীদ বা অন্ধ অনুকরণ করা। প্রত্যেক গ্রুপই তাদের ইমামদের, বুজুর্গদের মাজহাব বা মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে গ্রুপে গ্রুপে ভাগ হয়েছে এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ দল নিয়ে সন্তুষ্ট।
এখন দেখেন যারা ইমামদের তাকলীদ বা অন্ধ অনুসরণ করে নিজ নিজ দল নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে যেমন হানাফী, শাফেঈ, আহলে হাদিস ইত্যাদি এবং কোরআন ও সহীহ হাদিস ত্যাগ করে, তাদের ব্যাপার আল্লাহ কি বলেছেনঃ-
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম। [আন-নিসাঃ ৫৯]
(হে নবী) আপনি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত হবেন না যারা দ্বীনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে এবং দলে দলে বিভক্ত হয়ে যায়, যারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে সন্তুষ্ট। [সূরা রুম-৩১-৩২]
এই আয়াতে আল্লাহ তাদের মুশরিক বলে আখ্যায়িত করেছেন যারা কোরআন ও সহীহ হাদিস ছেড়ে ইমামদের আলেমদের বুজুর্গদের তাকলীদ করে তাদের। যেমন শীয়ারা। তারা তাদের বুজুর্গদের মাজহাব বা মতামতকে কঠোরভাবে মানে। বুঝতে চায় না কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা।
যারা দ্বীনকে খন্ড বিখন্ড করে, দলে দলে বিভক্ত হয় তাদের সাথে (হে নবী) আপনার কোন সম্পর্ক নাই। [সূরা আনআম-১৫৯]
এই আয়াতে যারা দলে দলে বিভক্ত হয় তাদের সাথে নবীর সম্পর্ক না থাকার কথা বলা হয়েছে। যাদের সাথে নবীজি সাঃ এর সম্পর্ক নাই তাদের সাথে আমাদের মুসলিমদেরও কোন সম্পর্ক নাই।
মুসলিম উম্মাহর মধ্যেও কেউ কেউ যদি দলে দলে বিভক্ত হন, ইমামদের তাকলীদ করেন, তাহলে তাদের সাথেও নবীজি (সাঃ) এর সম্পর্ক থাকবে না। আর যার সাথে নবীজি (সাঃ) এর সম্পর্ক নাই, তার সাথে আমাদের সম্পর্কের তো প্রশ্নই উঠে না। যারা কোরআন ও সহীহ হাদিস মেনে নিতে রাজি আছেন তারা আমাদের মুসলিমদের দ্বীনি ভাই। আর যদি কেউ না মেনে নেন তাহলে এই আয়াতটা তাদের জন্য -
যে কেউ রসূলের বিরুদ্ধাচারণ (কোরআন ও হাদিস অমান্যের মাধ্যমে) করে, তার কাছে সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং সব মুসলমানের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যে দিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান। [সূরা নিসা-৪:১১৫]
বিদায় হজ্জে রাসূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খুতবা (কিছু অংশ):-
''হে লোকসকল! আমার পর আর কোন নবী নেই, আর তোমাদের পর আর কোন উম্মত ও নেই।
আমি তোমাদের নিকট দুটো জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতদিন তোমরা এ দুটোকে আঁকড়ে থাকবে, ততদিন তোমরা গুমরাহ হবে না। সে দুটো হল আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের সুন্নাত।
তোমরা দ্বীনের ব্যাপারে বারাবারি থেকে বিরত থাকবে কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা দ্বীনের ব্যাপারে এই বারাবারির দরুন ধ্বংস হয়েছে।''
যারা মাজহাবের অন্ধ অনুসারী এরা বলে যে, মাজহাব মানা ফরয বা ওয়াজিব অর্থাৎ যে কোন একটা মাজহাব মানতেই হবে। শরীয়তের কোন বিষয় ফরয বলার/করার অধিকার একমাত্র আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার। তাহলে এরা মাজহাব মানা ফরয বলার অধিকার পেল কোথা থেকে? যদি মাজহাবের পক্ষে দলিল চাওয়া হয় তবে এরা দিতে পারবে না। কারন -
আল্লাহ্ সুবহআনাহু ওয়া তা'আলা পবিত্র কোরআনে আমাদের মুসলমান হিসেবে পরিচয় দিয়েছেনঃ-
বলুনঃ হে আহলে-কিতাবগণ! একটি বিষয়ের দিকে আস-যা আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সমান-যে, আমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করব না, তাঁর সাথে কোন শরীক সাব্যস্ত করব না এবং একমাত্র আল্লাহকে ছাড়া কাউকে পালনকর্তা বানাব না। তারপর যদি তারা স্বীকার না করে, তাহলে বলে দাও যে, সাক্ষী থাক আমরা তো অনুগত (মুসলমান)। [আল-ইমরানঃ ৬৪]
ইবরাহীম ইহুদী ছিলেন না এবং খ্রিষ্টানও ছিলেন না, কিন্তু তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলমান এবং তিনি মুশরিক ছিলেন না। [আল-ইমরানঃ ৬৭]
তার চেয়ে উত্তম কথা আর কোন ব্যক্তির হতে পারে যে মানুষদের আল্লাহ্ তা'আলার দিকে ডাকে এবং সে (নিজেও) নেক কাজ করে এবং বলে, আমি তো মুসলমানদেরই একজন? [হা-মীম সেজদাহঃ ৩৩]
নিশ্চয় মুসলমান পুরুষ, মুসলমান নারী, ঈমানদার পুরুষ, ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ, অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ, সত্যবাদী নারী, ধৈর্য্যশীল পুরুষ, ধৈর্য্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ, বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ, দানশীল নারী, রোযা পালণকারী পুরুষ, রোযা পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী পুরুষ, , যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী নারী, আল্লাহর অধিক যিকরকারী পুরুষ ও যিকরকারী নারী-তাদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার। [আল-আহযাবঃ ৩৫]
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। [আল-ইমরানঃ ১০২]
দুঃখজনক ব্যাপার হল - যারা নিজেদের কোন মাজহাবের অনুসারী না বলে মুসলমান বলে পরিচয় দেন তাদেরকে মাজহাবের অন্ধ অনুসারীরা 'লা-মাজহাবী', 'ওয়াহাবী', 'ব্রিটিশদের দালাল' ইত্যাদি বলে গালি দেয়। আমি ফেসবুকে এরকম অনেক মাজহাবী ভাইদের (মাজহাবী বলার কারন হচ্ছে এরা নিজেদের মুসলিম বলে পরিচয় দিতে হয়তো লজ্জা বোধ করেন) দেখেছি যারা অশালীন ভাষায় গালি দিতে এততুকু কুণ্ঠাবোধ করে না। আস্তাগফিরুল্লাহ। এদের অনেকের প্রোফাইলে গিয়ে দেখেছি যে কেউ কেউ বিভিন্ন মাদ্রাছায় পড়াশুনা করেছে কিংবা মাদ্রাছার শিক্ষক! কেউ হয়তো কুরআনে হাফেয কিংবা মুহাদ্দেস। এই লজ্জা কোথায় রাখি। তাহলে ভ্রান্ত পথে কারা আছে সেটা ভেবে দেখার ভার সবার উপর রইল।
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ্ পাকের। আসুন আমরা মাজহাবের নামে বিভক্ত না হয়ে কুরআন ও সুন্নাহ অনুসরণ করি যাতে আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা অর্জন করতে পারি।
জাযাকাল্লাহ খাইর
-------------------------------------------- ** ► মুসলিম ভাই ও বোনেরা, কিছু কথা না বললেই নয়। চার জন ইমাম আমাদের কাছে যথেষ্ট সম্মানিত। যারা মাজহাবের বিষয়ে কোন কথা বললেই সেটা না পরেই বা না বুঝেই একটা বাজে মন্তব্য বা গালি দিতে এতটুকু দ্বিধাবোধ করেন না সেটার কারন হাদিস দিয়েই ব্যাখ্যা করব ইনশাআল্লাহ।
একজন মুসলিমের মুখ থেকে বাজে গালি বের হওয়া খুবই লজ্জাজনক। একজন মুসলিম আর একজনকে যদি গালি দেয় আর সে যদি সেটা না হয় তাহলে যে গালি দিয়েছে সেই গালি তার উপরই ফেরত আসে হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমানকে গালাগালি করা 'ফিসক' বড় গুনাহ। আর তার সাথে যুদ্ধ ও মারামারি করা কুফরী। যুবাঈদ বলেনঃ আমি আবু ওয়াইলকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি সরাসরি আবদুল্লাহ (রা) থেকে শুনেছেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ। শো'বার হাদীসে আবু ওয়াইলকে যুবাঈদ যে কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন তার উল্লেখ নেই। [সহীহ মুসলিম, প্রথম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং- ১২৯]
আবদুল্লাহ ইবনে দীনার থেকে বর্ণিত। তিনি ইবনে উ'মর (রা) কে বলতে শুনেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোন লোক তার (মুসলিম) ভাইকে কাফের বলে তা তাদের দু'জনের যে কোন একজনের ওপর পতিত হবে। সে যাকে বলেছে যদি সে সত্য সত্যই কাফের হয়ে থাকে, তাহলে তো ঠিকই বলেছে। অন্যথায় কুফরী তার দিকেই প্রত্যাবর্তন করবে। [সহীহ মুসলিম, প্রথম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং- ১২৪]
অশ্লীল ভাষা ব্যবহার মুনাফিকীর লক্ষণ:-
বিশর ইবনে খালিদ (র)...আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, চারটি স্বভাব যার মধ্যে থাকে, সে মুনাফিক অথবা যার মধ্যে এ চারটি স্বভাবের কোন একটা থাকে, তার মধ্যেও মুনাফিকীর একটি স্বভাব থাকে, যে পর্যন্ত না সে তা পরিত্যাগ করে। (১) সে যখন কথা বলে মিথ্যা বলে (২) যখন ওয়াদা করে ভঙ্গ করে (৩) যখন চুক্তি করে তা লঙ্ঘন করে (৪) যখন ঝগড়া করে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে। [সহীহ বুখারী, চতুর্থ খণ্ড, হাদিস নং ২২৯৭ - ইফা]
আর মুনাফিকের শাস্তি সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিকৃষ্ট স্তরে থাকবে এবং তাদের জন্য তুমি কখনও কোনো সাহায্যকারী পাবে না। [সুরা নিসা: ১৪৫]
আবু মূসা আশআরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! কোন (মুসলিমের) ইসলাম সবচেয়ে ভালো? তিনি বললেনঃ যার জিহ্বা ও হাতের অনিষ্ট থেকে মুসলমানগণ নিরাপদ থাকে তার ইসলাম সবচেয়ে ভালো। [সহীহ মুসলিম, প্রথম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং- ৭১]
একজন যদি ভুল করে বা ভুল কিছু বলে তাহলে তাকে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে বলা একজন মুসলিমের কাজ। আর তা না করে যদি কেউ গালি দেয় তার মানে সেই লোক নিজেই তো শয়তানের ধোঁকায় পড়ে গোমরাহিতে লিপ্ত। তাই নয় কি?
কোন বিষয়ে পোষ্ট দিলে আগে সম্পূর্ণ লিখাটা পড়ুন, বুঝার চেষ্টা করুন। এরপর মন্তব্য করতে পারেন সুন্দর ভাষায় ও যুক্তি দিয়ে।
যারা না পড়েই বা বুঝার চেষ্টা না করেই কমেন্ট করে বা বাজে গালি দেয় তাদের এই আচরণ কিয়ামতের আলামতের কথাই মনে করিয়ে দেয় -
ইমরান ইবন মায়সারা (র)......আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন যে, কিয়ামতের কিছু নিদর্শন হলঃ ইলম লোপ পাবে, অজ্ঞতার বিস্তৃতি ঘটবে, মদপান ব্যাপক হবে এবং ব্যভিচার ছড়িয়ে পরবে। (বুখারী শরীফ, ১ম খণ্ড, হাদিস নং-৮০, ইলম অধ্যায়)
ইসমাঈল ইবন আবু উওয়ায়স (র)......আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল আস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসূলাল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা'আলা বান্দার অন্তর থেকে ইলম বের করে উঠিয়ে নেবেন না, বরং আলিমদের উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমেই ইলম উঠিয়ে নেবেন। যখন কোন আলিম বাকী থাকবে না তখন লোকেরা জাহিলদেরই নেতা হিসেবে গ্রহণ করবে। তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে, তারা না জেনেই ফতোয়া দিবে। ফলে তারা নিজেরাও গোমরাহ হবে, আর অপরকেও গোমরাহ করবে। ফিরাবরী (র) বলেন, আব্বাস (র)......হিশাম সুত্রেও অনুরুপ বর্ণিত আছে। (বুখারী শরীফ, ১ম খণ্ড, হাদিস নং-১০১, ইলম অধ্যায়)
---------------------------------------------------- ** ► মাজহাবি ভাইদের কাছে আমার কিছু প্রস্নঃ (প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রমাণাদি-সহ সঠিকভাবে দিলে আমরাও মাজহাব অনুসরণ করবোঃ
১। কুরআন বা, হাদিসে কি মাজহাব মানার কোন কথা আছে? ২। রাসুল (সঃ) কি কোন হাদিসে মাজহাব মানার কথা বলেছিলেন? ৩। রাসুল (সঃ) এর যুগে কি কোন মাজহাব ছিল? ৪। খোলাফায়ে রাশেদিনের যুগের খলিফারা বা সাহাবিরা কি মাজহাবী ছিলেন অথবা তারা কোন মাজহাব মানতে বলেছিলেন? ৫। ইমাম আবু হানিফা-সহ অন্যান্য ইমামগনেরা কি মাজহাব তৈরি করেছেন? ৬। ইমামগনের ছাত্রবৃন্দরা কি নির্দিষ্ট মাজহাব মানতেন? ৭। মাজহাব মানা যদি ফরজ বা ওয়াজিব হয়, তাহলে এটা কারা করলো? তাদের কি কোন কিছু ফরজ বা ওয়াজিব করার অধিকার আছে? ৮। যাদের নামে মাজহাব তৈরি করা হয়েছে, তারা কি মাজহাবগুলো বানিয়ে নিতে বলেছেন? ৯। ইমাম চারজন কোন মাজহাব মানতেন? ১০। ইমামগনের পিতা-মাতা, ওস্তাদরা কোন মাজহাব মানতেন? সেই মাজহাব কি এখন মানা যায় না? ১১। ঈমানদারি ও কুরান-হাদিসের বিদ্যায় চার ইমাম শ্রেষ্ঠ ছিলেন না চার খলিফা? ১২। যদি খলিফাগন শ্রেষ্ঠ হয়ে থাকে তাহলে তাদের নামে মাজহাব হলও না কেন? তারা কি ইমামগন অপেক্ষা কম যোগ্য ছিলেন? ১৩। মাজহাব মানার যে ইজমা হয়েছে বলে দাবি করা হয়, তা কবে, কোথায় এবং কোন দেশে হয়েছিল?
দয়া করে সঠিক উত্তর পেলে আমরাও মাজহাবের দিকে ঝুঁকে যাব আশা রাখি।
------------------------------------------------------ ** ► ইসলাম এক ও অখন্ড দ্বীন। যারা এ দ্বীনকে খন্ড খন্ড করার তালে আছে তাদের প্রতি আল্লাহর নিন্মোক্ত হুসিয়ারীঃ
০১) "যারা নিজেদের দ্বীনকে খন্ড খন্ড করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে তাদের সাথে আপনার (হে রাসূল) কোন সম্পর্ক নেই।” (সূরা আনআম-৬, আঃ-১৫৯)
০২) "হে ঈমানদারগণ ! আল্লাহর আনুগত্য কর, রাসূলের আনুগত্য কর এবং তোমাদের মধ্যে যারা হুকুম দানের অধিকারী তাদেরকেও মেনে চল। যখন তোমাদের মধ্যে মতের মিল না হয় তাহলে ফিরে আস আল্লাহ ও রাসূলের দিকে; যদি তোমরা আল্লহ ও আখেরাতের দিনের উপর ঈমান এনে থাক।” (সূরা নিসা-৪, আঃ ৫৯)
০৩) "তাদের সাথে লড়াই কর, যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে না, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যে গুলোকে হারাম করেছেন সেগুলোকে হারাম মনে করে না এবং সত্য দ্বীনকে দ্বীন হিসাবে গ্রহন করে না।” (সূরা তওবা-৯, আঃ ২৯)
০৪) "তাঁর (আল্লাহর) দিকে রুজু হও, আল্লাহকে ভয় কর, সালাত ক্বায়েম কর, আর সেই মুশরিকদের মধ্যে সামিল হয়ো না, যারা নিজেদের দ্বীনকে খন্ড খন্ড করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে এবং প্রত্যেক দলই নিজেরটা নিয়েই সন্তুষ্ট।” (সুরা রুম-৩০, আঃ ৩১, ৩২)
০৫) "হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসুলের অনুসরণ কর, আর তোমাদের আমলগুলি ধ্বংস করো না।” (সূরা মুহাম্মদ-৪৭, আঃ ৩৩)
০৬) "তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি।” (সূরা আল-ইমরান, আঃ ৩ঃ১০৫)
০৭) "আল্লাহকে ভয় কর, তোমরা তোমাদের পরস্পরে সংশোধন করে নাও, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুসরণ কর যদি তোমরা মু’মিন হও।” (সূরা আনফাল-৮, আঃ ১)
০৮) "রাসূল তোমাদেরকে যা প্রদান করেন তা গ্রহণ কর, যা প্রদান করেন নি তা থেকে বিরত থাক।” (সূরা হাশর-৫৯, আঃ ৭)
০৯) "তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তার আনুগত্য কর। তাঁকে ছাড়া আর কোন অলিদের আনুগত্য করো না। তোমরা কম লোকই উপদেশ গ্রহণ কর।” (সুরা আ’রাফ-৭, আঃ ৩)
১০) "তোমরা সকলে একত্রিত হয়ে আল্লাহর রজ্জুকে আকড়িয়ে ধর, সাবধান! বিচ্ছিন্ন হয়ো না।” (সূরা আল ইমরান-৩, আঃ ১০৩)
হাদীসঃ ০১) রাসূল (সঃ) বলেছেন, "ওহে, অবশ্যই যারা তোমাদের পূর্বে ছিল তারা ৭২ দলে বিভক্ত ছিল এবং অবশ্য্ই আমার এই উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। ইহাদের সকল দলই দোযখে যাবে এক দল ব্যতিত। সাহাবা (রাঃ) জিজ্ঞেসা করলেন, "ইয়া রাসূলুল্লাহ, সেটি কোন দল? নবী (সঃ) বললেন, ” আমি এবং আমার সাহাবীগণ যার উপর আছি, তার উপর যারা থাকবে।” (তিরমিজী ও আবু দাউদ, রেওয়ায়েতে মেশকাত শরীফ ১ম খন্ড, হাদীস নং- ১৬৩)
০২) "আমি তোমাদের নিকট দু’টা জিনিষ রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা সে জিনিষ দু’টি আঁকড়িয়ে ধরে থাকবে, তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। এ দু’টা জিনিষ হ’ল আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের সুন্নাহ।” (মেশকাত শরীফ, ১ম খন্ড, হাদীস নং- ১৭৭
|
Views: 553 |
Added by: Jahir
| Rating: 0.0/0 |
|