Thursday, 2025-07-03, 2:05 AM
Welcome Guest | Sign Up | Login

My site

Site menu
Calendar
«  December 2012  »
Su Mo Tu We Th Fr Sa
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031
Entries archive
Site friends
  • Create a free website
  • Online Desktop
  • Free Online Games
  • Video Tutorials
  • All HTML Tags
  • Browser Kits
  • Statistics

    Total online: 1
    Guests: 1
    Users: 0

    Blog

    Main » 2012 » December » 18 » যুলম এমন একটি ভয়ানক বিষয় যে, আল্লাহ তা‘আলা যালেমকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। এটি একটি জঘন্য অপরাধ,
    3:58 PM
    যুলম এমন একটি ভয়ানক বিষয় যে, আল্লাহ তা‘আলা যালেমকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। এটি একটি জঘন্য অপরাধ,
    যুলম শব্দটি আরবী। বাংলায় এর অর্থ অত্যাচার করা, অবিচার করা, নির্যাতন করা বা সীমা অতিক্রম করা। অন্যায়ভাবে কারো সম্পদ দখল করা, কারো চরিত্র হনন করা, কারো অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, কাউকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা, মিথ্যা সাক্ষ্য প্রমাণ করার ব্যবস্থা... করা, মিথ্যা মামলা দেয়া, কাউকে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করা, কারো জমি দখল করা, অন্যায়ভাবে চাকরীচ্যুত করাসহ ইত্যাদি কাজ যুলুমের অন্তর্ভুক্ত।

    যুলম এমন একটি ভয়ানক বিষয় যে, আল্লাহ তা‘আলা যালেমকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। এটি একটি জঘন্য অপরাধ, মানবতাবিরোধী কাজ, গুরুতর পাপকাজ। কোন ইমানদার ব্যক্তি কারো উপর যুলম করতে পারে না। যুলুমের কারণে দুনিয়া এবং আখেরাতে ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

    ‘অতঃপর তোমরা যা বল তারা তা মিথ্যা বলেছে। অতএব তোমরা আযাব ফেরাতে পারবে না এবং কোন সাহায্যও করতে পারবে না। আর তোমাদের মধ্যে যে যুলম করবে তাকে আমি মহা আযাব আস্বাদন করাব।’ [সূরা আল-ফুরকান-১৯]

    আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনের বিভিন্ন দিকে যুলুম এমনভাবে ব্যাপকতা লাভ করেছে, যা থেকে উত্তরণ হওয়া খুবই জরুরী।

    যুলুমের কারণে দুনিয়াতে যেসব ভয়াবহ পরিণামের সম্মুখীন হতে হবে তা হলো:

    ক) যুলুমের কারণে ব্যাপক বিপর্যয় দেখা দিবে। এ বিপর্যয় কোন বিশেষ গোষ্ঠী বা ব্যক্তির উপর আসবে না, বরং সকলেই এর ভুক্তভোগী হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

    ‘আর তোমরা ভয় কর ফিতনাকে যা তোমাদের মধ্য থেকে বিশেষভাবে শুধু যালিমদের উপরই আপতিত হবে না। আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ আযাব প্রদানে কঠোর।’ [সূরা আনফাল -২৫]

    খ) যালেমদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু অপেক্ষা করছে। আল্লাহ্ বলেন,

    ‘আর যদি তুমি দেখতে, যখন যালিমরা মৃত্যু কষ্টে থাকে, এমতাবস্থায় ফেরেশতারা তাদের হাত প্রসারিত করে আছে (তারা বলে), ‘তোমাদের জান বের কর। আজ তোমাদেরকে প্রতিদান দেয়া হবে লাঞ্ছনার আযাব, কারণ তোমরা আল্লাহর উপর অসত্য বলতে এবং তোমরা তার আয়াতসমূহ সম্পর্কে অহংকার করতে।’ [সূরা আল-আন‘আম:৯৩]

    গ) যুলুমের কারণে জাতির সফলতা আসে না । আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

    নিশ্চয় যালিমরা সফলকাম হয় না। [সূরা আন‘আম-২১]

    অনুরূপভাবে আরও এসেছে,

    ‘আর চিরঞ্জীব, চিরপ্রতিষ্ঠিত সত্তার সামনে সকলেই অবনত হবে। আর সে অবশ্যই ব্যর্থ হবে যে যু্লম বহন করবে।’ [সূরা ত্বা-হা:১১১]

    ঘ) সমাজ ও রাষ্ট্রে যখন যুলুম চলতে তাকে তখন আল্লাহর নেয়ামত সংকুচিত হয়ে যায়। অন্য আয়াতে এসেছে,

    ‘সুতরাং ইয়াহূদীদের যুলমের কারণে আমি তাদের উপর উত্তম খাবারগুলো হারাম করেছিলাম, যা তাদের জন্য হালাল করা হয়েছিল এবং আল্লাহর রাস্তা থেকে অনেককে তাদের বাধা প্রদানের কারণে।’ [সূরা আন-নিসা:১৬]

    ঙ) যালেমদের জন্য দুনিয়াতে বিভিন্ন শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

    ‘অতঃপর যে উপদেশ তাদেরকে দেয়া হয়েছিল, যখন তারা তা ভুলে গেল তখন আমি মুক্তি দিলাম তাদেরকে যারা মন্দ হতে নিষেধ করে। আর যারা যুলম করেছে তাদেরকে কঠিন আযাব দ্বারা পাকড়াও করলাম। কারণ, তারা পাপাচার করত।’ [সূরা আল-আ‘রাফ -১৬৫]

    চ) যালিমের শক্তি যতই শক্তিশালী হোক না কেন তার পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। আল্লাহ বলেন,

    ‘অতএব যালিম সম্প্রদায়ের মূল কেটে ফেলা হল।’

    দুনিয়ার পাশাপাশি আখেরাতেও যুলুমের কারণে যেসব ভয়াবহ অবস্থা হবে তাহলো:

    ক) আল্লাহ তা‘আলা যালেমদেরকে আখেরাতে ভয়ানক শাস্তি দিবেন। সূরা বুরুজের ১০ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

    নিশ্চয় যারা মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে নির্যাতন করে, তারপর তাওবা করে না, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব। আর তাদের জন্য রয়েছে আগুনে দগ্ধ হওয়ার আযাব।’’

    সূরা ফুরকানের ৩৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে,

    ‘‘আর আমরা যালেমদের জন্য কঠিন পীড়াদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা করেছি’’।

    খ) যালেমের জন্য কিয়ামতের দিন বিরাট মুসিবত রয়েছে, তার জন্য শুধু অন্ধকার আর অন্ধকার । ইমাম বুখারী ও মুসলিম (রহ.) আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

    যুলুম-অত্যাচার যালিমের জন্য অন্ধকারের কারণ হবে। অর্থাৎ হাশরের ময়দানে যালিমের চারপাশে শুধু অন্ধকার আর অন্ধকার থাকবে। [বুখারী:২৪৪৭; মুসলিম:২৫৭৮]

    গ) যুলুম করে সাময়িক আনন্দ, কোন প্রাচুর্য বা কোন পদোন্নতি হলে ও যালেমের মত হতভাগা আর কেহ নেই।

    আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা কি জান গরীব কে? সাহাবীগণ বললেন, আমাদের মধ্যে যার সম্পদ নাই সে হলো গরীব লোক। তখন তিনি বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে সে হলো গরীব যে, কিয়ামতের দিন নামায, রোযা ও যাকাত নিয়ে আসবে অথচ সে অমুককে গালি দিয়েছে, অমুককে অপবাদ দিয়েছে, অন্যায়ভাবে লোকের মাল খেয়েছে, সে লোকের রক্ত প্রবাহিত করেছে এবং কাউকে প্রহার করেছে। কাজেই এসব নির্যাতিত ব্যক্তিদেরকে সেদিন তার নেক আমল নামা দিয়ে দেয়া হবে। এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। [তিরমিযী:২৪১৮]

    ঘ) যে নিজের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত বা দুনিয়া উপার্জন করার জন্য কারো উপর যুলুম করলো কিয়ামতের দিন সে হবে নিকৃষ্ট ব্যক্তি। ইবনে মাজাহ আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, কিয়ামতের দিন মর্যাদার দিক দিয়ে সে হবে সর্বাধিক নিকৃষ্ট যে নিজের আখেরাতকে অন্যের দুনিয়ার কারণে ধ্বংস করে দিয়েছে।

    ঙ) আখেরাতে যালেমের ভাল আমল ছিনিয়ে নেয়া হবে । আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন,

    রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যদি কোন ব্যক্তি কারো মানহানি বা অন্যকোন বিষয়ে অত্যাচার করে তাহলে সে যেন জীবিত থাকতেই তা ক্ষমা চেয়ে নেয় অথবা অত্যাচার পরিমাণ বিনিময় পরিশোধ করে দেয়। কেননা সে দিন (কিয়ামত) তার নিকট কোন দীনার ও দিরহাম কিছুই থাকবেনা। যদি তার ভাল কোন আমল থাকে তাহলে অত্যাচার অনুপাতে তার থেকে ভাল আমল ছিনিয়ে নেয়া হবে। আর যদি কোন নেক আমল না থাকে অত্যাচারিত ব্যক্তির পাপকে এনে তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। [সহীহ ইবন হিব্বান:৭৩৬১]

    আবু মূসা আল -আশ‘আরী (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন,

    নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা অত্যাচারীকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। অবশেষে তাকে এমনভাবে পাকড়াও করেন যে, সে আর ছুটে যেতে পারে না। [বাইহাকী: ৬/৯৪]

    যুলুম থেকে বাঁচার উপায়:

    ক) যুলুম থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা মহাপরাক্রমশালী এবং যালিমের যুলুম থেকে তিনিই একমাত্র রক্ষাকারী। এজন্য বেশী বেশী আল্লাহর নিকট ধর্না দিতে হবে । আল্লাহ বলেন,

    তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দিব, যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে তারা অচিরে জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে।’ [আল-মু‘মিন-৬০]

    আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুত: আমি রয়েছি সন্নিকটে। [আল-বাকারাহ: ১৮৬]

    খ) যুলুম থেকে বাঁচার জন্য ধৈর্যধারণ করতে হবে । রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :

    ‘‘‌ঈমানদার ব্যক্তির উদাহরণ শস্যের নরম ডগার ন্যায়, বাতাস যে দিকেই বয়ে চলে, সেদিকেই তার পত্র-পল্লব ঝুঁকে পড়ে। বাতাস যখন থেমে যায়, সেও স্থির হয়ে দাঁড়ায়। ইমানদারগণ বালা-মুসিবত দ্বারা এভাবেই পরীক্ষিত হন। কাফেরদের উদাহরণ দেবদারু (শক্ত পাইন) বৃক্ষের ন্যায়, যা একেবারেই কঠিন ও সোজা হয়। আল্লাহ যখন ইচ্ছা করেন, তা মূলসহ উপড়ে ফেলেন।’’ [বুখারী: ৭৪৬৬]

    শস্যের শিকড় মাটি আঁকড়ে ধরে। তার সাথে একাকার হয়ে যায়। যদিও বাতাস শস্যকে এদিক-সেদিক দোলায়মান রাখে। কিন্তু ছুঁড়ে মারতে, টুকরা করতে বা নীচে ফেলে দিতে পারে না। তদ্রূপ মুসিবত যদিও মুমিনকে ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত ও চিন্তামগ্ন রাখে, কিন্তু সে তাকে হতবিহবল, নিরাশ কিংবা পরাস্ত করতে পারে না। কারণ, আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস তাকে প্রেরণা দেয়, তার মধ্যে শক্তি সঞ্চার করে, সর্বোপরি তাকে হেফাযত করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

    হে মুমিনগণ, ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। সুরা বাকারাহ-১৫৩।

    হাদিসে এসেছে ,

    ‘‘ধৈর্যের চেয়ে উত্তম ও ব্যাপকতর কল্যাণ কাউকে প্রদান করা হয় নি।’ [বুখারী:১৪৬৯; মুসলিম:১০৫৩]

    সহিহ মুসলিমে বর্ণিত আছে,

    ‘‘মুমিনের ব্যাপারটি চমৎকার, তার প্রতিটি কাজই কল্যাণের; মুমিন ছাড়া আর কারও জন্য তা হয় না; নেয়ামত অর্জিত হলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, যা তার জন্য মঙ্গলজনক এতে কৃতজ্ঞতার সওয়াব অর্জিত হয়। মুসিবতে পতিত হলে ধৈর্যধারণ করে, তাও তার জন্য কল্যাণকর এতে ধৈর্যের সওয়াব লাভ হয়।’ [মুসলিম:২৯৯৯]

    হাসান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন : ‘‘আমাদের অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞানীদেরও অভিজ্ঞতা, ধৈর্যের চেয়ে মূল্যবান বস্তু আর পায়নি। ধৈর্যের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করা যায়, তবে তার সমাধান সে নিজেই।’’ অর্থাৎ প্রত্যেক জিনিসের জন্য ধৈর্যের প্রয়োজন, আবার ধৈর্যের জন্যও ধৈর্য প্রয়োজন।

    গ) যালেমের যুলুমকে ভয় না পেয়ে আল্লাহর উপর দৃঢ় আস্থা এবং তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে । দুনিয়ার উত্থান-পতন সুখ-দুঃখ স্বাভাবিক ও নগণ্য মনে করতে হবে। তদুপরি চির-সত্যবাদী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে বিশ্বাস তো আছেই: ‘

    ‘জেনে রেখ, সমস্ত মানুষ জড়ো হয়ে যদি তোমার উপকার করতে চায়, কোনও উপকার করতে পারবে না, তবে যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। আবার তারা সকলে মিলে যদি তোমার ক্ষতি করতে চায়, কোনও ক্ষতি করতে পারবে না, তবে যতটুকু আল্লাহ তোমার কপালে লিখে রেখেছেন। কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে, কিতাব শুকিয়ে গেছে।’’ [সুনান তিরমিযী:২৫১৬]

    ঘ) আল্লাহর রহমাতের প্রশস্ততা ও তার করুণার কথা বেশী বেশী স্মরণ করা । কেননা যুলুমের কষ্টের তুলনায় আল্লাহর রহমাতের প্রশস্ততা অনেক বড় বিষয়। ইমাম বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

    ‘‘আমার ব্যাপারে আমার বান্দার ধারণা অনুযায়ী, আমি ব্যবহার করি।’’ [বুখারী:৭৪০৫; মুসলিম: ২৬৭৫]

    যুলুম দৃশ্যত অসহ্য-কষ্টদায়ক হলেও পশ্চাতে কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। এরশাদ হচ্ছে :

    ‘‘এবং হতে পারে কোন বিষয় তোমরা অপছন্দ করছ অথচ তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হতে পারে কোন বিষয় তোমরা পছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।’’ [বাকারাহ-১১৬]

    ঙ) মুমিনের কর্তব্য বিপদের মুহূর্তে প্রতিদানের কথা স্মরণ করা। এতে মুসিবত সহনীয় হয়। কারণ কষ্টের পরিমাণ অনুযায়ী সওয়াব অর্জিত হয়। সুখের বিনিময়ে সুখ অর্জন করা যায় না- সাধনার ব্রিজ পার হতে হয়। প্রত্যেককেই পরবর্তী ফলের জন্য নগদ শ্রম দিতে হয়। দুনিয়ার কষ্টের সিঁড়ি পার হয়ে আখেরাতের স্বাদ আস্বাদান করতে হয়।

    একদা হজরত আবু বকর রা. ভীত-ত্রস্ত হালতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেন, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনের এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর কীভাবে অন্তরে স্বস্তি আসে? ‘‘না তোমাদের আশায় এবং না কিতাবীদের আশায় (কাজ হবে)। যে মন্দ কাজ করবে তাকে তার প্রতিফল দেয়া হবে। আর সে তার জন্য আল্লাহ ছাড়া কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না।’’ [নিসা-১২৩]।

    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :

    ‘‘হে আবু বকর, আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করুন, তুমি কি অসুস্থ হও না? তুমি কি বিষণ্ণ হও না? মুসিবত তোমাকে কি পিষ্ট করে না? উত্তর দিলেন, অবশ্যই। বললেন : ‘‘এগুলোই তোমাদের অপরাধের কাফফারা-প্রায়শ্চিত্ত।’’ [মুসনাদ আহমাদ: ১/১১]

    চ) যুলুম থেকে বাঁচার জন্য মাযলুমের পক্ষাবলম্বন করা। কারণ আল্লাহ তা‘আলা মাযলুমের উপর রহমত করেন এবং তার দোয়া কবুল করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

    তোমরা মাযলুমের ফরিয়াদ থেকে বেঁচে থাক। কেননা, মাযলুম এবং আল্লাহর মাঝে কোন দেয়াল নেই । [সহিহ বূখারী:২৪৪৮]

    ছ) মাযলুমের ক্রন্দন আকাশ-বাতাস ভারী করে। তাই যুলুমের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করা ইমানের দাবী।

    আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

    আর তোমাদের কী হল যে, তোমরা আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করছ না! অথচ দুর্বল পুরুষ, নারী ও শিশুরা বলছে, ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে বের করুন এ জনপদ থেকে’ যার অধিবাসীরা যালিম এবং আমাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে একজন অভিভাবক নির্ধারণ করুন। আর নির্ধারণ করুন আপনার পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী। (সূরা নিসা-৭৫)

    জ) যালিমের পক্ষ ত্যাগ করা এবং তাকে যুলুম করা থেকে বিরত রাখা । আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

    আর যারা যুলম করেছে তোমরা তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো না; অন্যথায় আগুন তোমাদেরকে স্পর্শ করবে এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক থাকবে না। অতঃপর তোমরা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না। (সূরা হুদ-১১৩)।

    উপরোক্ত আলোচনা থেকে এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, যুলুম একটি পাপকাজ এবং এর জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে সবাইকে জবাবদিহির কাঠগড়ায় দাড়াতে হবে। তাই আমাদেরকে মাযলুমের পক্ষাবলম্বন করে যালিমের বিপক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

    তোমার ভাই যালিমকে (যুলুম করা থেকে বিরত রাখার মাধ্যমে) সাহায্য কর এবং মাযলুমকে (যুলুমের হাত থেকে বাঁচানো মাধ্যমে) সাহায্য কর। [বুখারী: ২৪৪৩]

    Views: 297 | Added by: Jahir | Rating: 0.0/0
    Total comments: 0
    Name *:
    Email *:
    Code *: