Tuesday, 2024-04-30, 9:17 AM
Welcome Guest | Sign Up | Login

My site

Site menu
Calendar
«  April 2024  »
SuMoTuWeThFrSa
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930
Site friends
  • Create a free website
  • Online Desktop
  • Free Online Games
  • Video Tutorials
  • All HTML Tags
  • Browser Kits
  • Statistics

    Total online: 1
    Guests: 1
    Users: 0

    আল্লাহ্ কোথায়?

    আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান। অথচ মহান আল্লাহ বলছেন, তিনি আরশের উপর সমাসীন। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে ৭টি আয়াত বর্ণিত হ...য়েছে।(ইমাম ইবনু তায়মিয়া, মাজমূউ ফাতাওয়া ৩/১৩৫।)
    রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)ও বলেছেন যে, আল্লাহ আসমানে আছেন। ছাহাবী (রাঃ) এবং তাবেঈগণ সকলেই বলেছেন আল্লাহ আসমানে আছেন। তাছাড়া সকল ইমামই বলেছেন, আল্লাহ আসমানে আছেন। এরপরেও যদি বলা হয়, আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান তাহ’লে কি ঈমান থাকবে এবং আমল কবুল হবে?

    আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান- একথা ঠিক নয়, বরং পবিত্র কুরআন বলছে, আল্লাহ আরশে সমাসীন। এ মর্মে বর্ণিত দলীলগুলো নিম্নরূপ-
    (১) আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক হচ্ছেন সেই আল্লাহ যিনি আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন’ (আ‘রাফ ৭/৫৪)।
    (২) ‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন’ (ইউনুস ১০/৩)।
    (৩) ‘আল্লাহই ঊর্ধ্বদেশে আকাশমন্ডলী স্থাপন করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত- তোমরা এটা দেখছ। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হ’লেন’ (রা‘দ ১৩/২)।
    (৪) ‘দয়াময় (আল্লাহ) আরশে সমাসীন’ (ত্ব-হা ২০/৫)।
    (৫) ‘তিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেন; অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন। তিনিই রহমান, তাঁর সম্বন্ধে যে অবগত আছে তাকে জিজ্ঞেস করে দেখ’ (ফুরক্বান ২৫/৫৯)।
    (৬) ‘আল্লাহ তিনি, যিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছু সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন’ (সাজদাহ ৩২/৪)।
    (৭) ‘তিনিই ছয় দিনে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন’ (হাদীদ ৫৭/৪)।

    উল্লেখিত আয়াতগুলো দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ তা‘আলা আরশে সমাসীন আছেন। কিভাবে সমাসীন আছেন, একথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন, ‘ইসতেওয়া বা সমাসীন হওয়া বোধগম্য, এর প্রকৃতি অজ্ঞাত, এর প্রতি ঈমান আনা ওয়াজিব এবং এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা বিদ‘আত’।(শায়খুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়া, আর-রিসালা আত-তাদাম্মুরিয়্যাহ, পৃঃ ২০।)

    আল্লাহ তা‘আলা আসমানের উপর আছেন। এ মর্মে মহান আল্লাহ বলেন,
    ‘তোমরা কি (এ বিষয়ে) নিরাপদ হয়ে গেছ যে, যিনি আকাশের উপর রয়েছেন তিনি তোমাদের সহ ভূমিকে ধসিয়ে দিবেন না? আর তখন ওটা আকস্মিকভাবে থরথর করে কাঁপতে থাকবে। অথবা তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ যে, আকাশের উপর যিনি রয়েছেন তিনি তোমাদের উপর পাথর বর্ষণকারী বঞ্ঝাবায়ু প্রেরণ করবেন না? তখন তোমরা জানতে পারবে কিরূপ ছিল আমার সতর্কবাণী’? (মুলক ৬৭/ ১৬-১৭)।
    ২. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিছু সৃষ্টিকে উপরে উঠিয়ে নিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘বরং আল্লাহ তাকে (ঈসাকে) নিজের দিকে উঠিয়ে নিয়েছেন’ (নিসা ৪/১৫৮)। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, ‘স্মরণ কর, যখন আল্লাহ বললেন, হে ঈসা! আমি তোমার কাল পূর্ণ করছি এবং আমার নিকট তোমাকে তুলে নিচ্ছি’ (আলে ইমরান ৩/৫৫)।
    ৩. আল্লাহ তা‘আলা আরশের উপরে আছেন, এর প্রমাণে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছ-
    আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন আল্লাহ মাখলূক সৃষ্টির ইচ্ছা পোষণ করলেন, তখন তাঁর কাছে আরশের উপর রক্ষিত এক কিতাবে লিপিবদ্ধ করেন- অবশ্যই আমার করুণা আমার ক্রোধের উপর জয়লাভ করেছে’।(বুখারী হা/৩১৯৪ ‘সৃষ্টির সূচনা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১; মিশকাত হা/২৩৬৪ ‘দো‘আ’ অধ্যায়, ‘আল্লাহ্র রহমতের প্রশস্ততা’ অনুচ্ছেদ।)

    ৪. আমরা দো‘আ করার সময় দু’হাত উত্তোলন করে আল্লাহর নিকট চাই। এতে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ আরশের উপর আছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
    সালমান ফারেসী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ লজ্জাশীল ও মহানুভব। যখন কোন ব্যক্তি তাঁর নিকট দু’হাত উত্তোলন করে দো‘আ করে, তখন তাকে শূন্য হাতে ব্যর্থ মনোরথ করে ফেরত দিতে তিনি লজ্জাবোধ করেন’।(তিরমিযী হা/৩৫৫৬, ইবনু মাজাহ হা/৩৮৬৫, হাদীছ ছহীহ।)

    ৫. প্রত্যেক রাতে আল্লাহ তা‘আলার দুনিয়ার আসমানে নেমে আসা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, তিনি আরশের উপর সমাসীন। এর প্রমাণ রাসূল (ছাঃ)-এর নিম্নোক্ত হাদীছ :
    আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে মহান আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন, কে আছ যে আমাকে ডাকবে আর আমি তার ডাকে সাড়া দিব? কে আছ যে আমার কাছে কিছু চাইবে আর আমি তাকে তা দান করব। কে আছ যে আমার কাছে ক্ষমা চাবে আর আমি তাকে ক্ষমা করে দিব’।(বুখারী হা/১১৪৫; মুসলিম হা/৭৫৮; আবুদাঊদ হা/১৩১৫; ইবনু মাজাহ হা/১৩৬৬; মিশকাত হা/১২২৩ ‘ছালাত’ অধ্যায়, ‘তাহাজ্জুদের প্রতি উৎসাহিতকরণ’ অনুচ্ছেদ।)

    ৬. মু‘আবিয়া বিন আল-হাকাম আস-সুলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
    ‘আমার একজন দাসী ছিল। ওহুদ ও জাওয়ানিয়্যাহ (ওহুদের নিকটবর্তী একটি স্থান) নামক স্থানে সে আমার ছাগল চরাত। একদিন দেখি, নেকড়ে আমাদের একটি ছাগল ধরে নিয়ে গেছে। আমি একজন আদম সন্তান (সাধারণ মানুষ)। তারা যেভাবে ক্রদ্ধ হয় আমিও সেভাবে ক্রদ্ধ হই। কিন্তু আমি তাকে এক থাপ্পড় মারি। অতঃপর রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট আসলে একে আমি সাংঘাতিক (অন্যায়) কাজ বলে গণ্য করি। তাই আমি বলি যে, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমি কি তাকে আযাদ করব না? তিনি বললেন, তাকে আমার নিকট নিয়ে আস। আমি তাকে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট নিয়ে আসলাম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহ কোথায়? সে বলল, আসমানে। তিনি (ছাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমি কে? তখন সে বলল, আপনি আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)। তখন নবী করীম (ছাঃ) বললেন, তাকে মুক্তি দিয়ে দাও, কারণ সে একজন ঈমানদার নারী’।(ছহীহ মুসলিম হা/৫৩৭ ‘মসজিদ সমূহ ও ছালাতের স্থানসমূহ’ অনুচ্ছেদ।)

    ৭. বিদায় হজ্জের ভাষণে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ছাহাবীগণকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, তোমরা আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে, তখন কি বলবে? ঐ সময় উপস্থিত ছাহাবীগণ বলেছিলেন, আমরা সাক্ষ্য দিব যে, আপনি আপনার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছেন। একথা শুনার পর আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তাঁর হাতের আঙ্গুল আসমানের দিকে উত্তোলন করে বলেছিলেন, হে আল্লাহ! তাদের কথার উপর সাক্ষি থাক’।(ছহীহ মুসলিম হা/১২১৮ ‘হজ্জ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৯।)

    ৮. আনাস বিন মালেক (রাঃ) বলেন,
    ‘যয়নব (রাঃ) নবী করীম (ছাঃ)-এর অন্যান্য স্ত্রীগণের উপর গর্ব করে বলতেন যে, তাঁদের বিয়ে তাঁদের পরিবার দিয়েছে, আর আমার বিয়ে আল্লাহ সপ্ত আসমানের উপর থেকে সম্পাদন করেছেন’।(বুখারী হা/৭৪২০ ‘তাওহীদ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২০।)

    ৯. ইসরা ও মি‘রাজ-এর ঘটনায় আমরা লক্ষ্য করি যে, আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-কে যখন একের পর এক সপ্ত আসমানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তখন তাঁর সাথে সাক্ষাৎ হয়েছিল নবী-রাসূলগণের এবং আল্লাহর সান্নিধ্যের জন্য সপ্ত আসমানের উপর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর যখন আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) পঞ্চাশ ওয়াক্ত ছালাত নিয়ে মূসা (আঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করেন, তখন মূসা (আঃ) রাসূল (ছাঃ)-কে বলেছিলেন, তোমার উম্মত ৫০ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করতে সক্ষম হবে না। যাও আল্লাহর নিকট ছালাত কমিয়ে নাও। এরপর কমাতে কমাতে পাঁচ ওয়াক্ত হয়। এরপর মূসা (আঃ) আরও কমাতে বলেছিলেন, কিন্তু রাসূল (ছাঃ) লজ্জাবোধ করেছিলেন।(মুত্তাফাক্ব আলাইহ; মিশকাত হা/৫৮৬২।) এ সময় আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ছালাত কমানোর জন্য সপ্ত আকাশের উপর উঠতেন। আবার ফিরে আসতেন মূসা (আঃ)-এর নিকট ষষ্ঠ আসমানে। এ দ্বারা বুঝা যায় যে, আল্লাহ তা‘আলা আরশের উপরে আছেন।

    ১০. ফেরাঊন নিজেকে আল্লাহ দাবী করেছিল। সে কাফের হওয়া সত্ত্বেও তার বিশ্বাস ছিল যে, আল্লাহ আরশের উপর আছেন। ফেরাঊন বলল, ‘হে হামান! তুমি আমার জন্য এক সুউচ্চ প্রাসাদ তৈরী কর, যাতে আমি অবলম্বন পাই আসমানে আরোহণের, যেন আমি দেখতে পাই মূসা (আঃ)-এর মা‘বূদকে (মুমিন ৪০/৩৭-৩৮)।

    সালাফে ছালেহীন থেকে আমরা যা পাই তা হচ্ছে, আল্লাহ আসমানের উপর আরশে অবস্থান করছেন। আবুবকর (রাঃ) থেকে আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, যখন আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর ওফাত হয়, আবু বকর (রাঃ) এসে তাঁর (ছাঃ) কপালে চুমু খেয়ে বলেন, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক। আপনি জীবনে ও মরণে উত্তম ছিলেন। এরপর আবু বকর (রাঃ) বলেন, হে মানব জাতি! তোমাদের মধ্যে যারা মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর ইবাদত করতে, তারা জেনে রাখ যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) মৃত্যুবরণ করেছেন। আর তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহর ইবাদত কর তারা জেনে রাখ যে, আল্লাহ আকাশের উপর (আরশে)। তিনি চিরঞ্জীব।(বুখারী, আত-তারীখ, ১ম খন্ড, পৃঃ ২০২; ইবনুল ক্বাইয়িম, ইজতিমাউল জুয়ূশিল ইসলামিয়্যাহ, পৃঃ ৮৩-৮৪; আর-রাহীকুল মাখতূম, পৃঃ ৪৭০।)

    ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেন, ‘যে বলবে যে, আল্লাহ আসমানে আছেন, না যমীনে তা আমি জানি না, সে কুফরী করবে। কেননা আল্লাহ বলেন, রহমান আরশে সমাসীন। আর তার আরশ সপ্ত আকাশের উপর।(ইজতিমাউল জুয়ূশিল ইসলামিয়্যাহ, পৃঃ ৯৯। )

    ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন, ‘আল্লাহ আকাশের উপর এবং তাঁর জ্ঞানের পরিধি সর্বব্যাপী বিস্তৃত। কোন স্থানই তাঁর জ্ঞানের আওতার বহির্ভূত নয়’।(ইজতিমাউল জুয়ূশিল ইসলামিয়্যাহ, পৃঃ ১০১।)

    ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) বলেন,
    ‘সুন্নাহ সম্পর্কে আমার ও আমি যেসকল আহলেহাদীছ বিদ্বানকে দেখেছি এবং তাদের নিকট থেকে গ্রহণ করেছি যেমন সুফিয়ান, মালেক ও অন্যান্যরা, তাদের মত হল এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা যে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ছাড়া কোন (হক্ব) উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল। আর আল্লাহ আকাশের উপর তাঁর আরশে সমাসীন। তিনি যেমন ইচ্ছা তাঁর সৃষ্টির নিকটবর্তী হন এবং যেমন ইচ্ছা তেমন নীচের আকাশে অবতরণ করেন’।(ইজতিমাউল জুয়ূশিল ইসলামিয়্যাহ, পৃঃ ১২২।)

    ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এর পুত্র আব্দুল্লাহ বলেন,
    ‘আমার বাবাকে জিজ্ঞেস করা হ’ল যে, আল্লাহ তাঁর সৃষ্টি থেকে দূরে সপ্তম আকাশের উপরে তাঁর আরশে সমাসীন। তাঁর ক্ষমতা ও জ্ঞানের পরিধি সর্বত্র বিস্তৃত। এর উত্তরে তিনি (ইমাম আহমাদ) বলেন, হ্যাঁ! তিনি (আল্লাহ) আরশের উপর সমাসীন এবং তাঁর জ্ঞানের বহির্ভূত কিছুই নেই।(ইজতিমাউল জুয়ূশিল ইসলামিয়্যাহ, পৃঃ ১৫২-১৫৩।)

    আল্লাহ্‌ যদি সাত আসমানের উপরে আরশেই থেকে থাকেন তবে কেন বলা হয় যে তিনি আমাদের ঘাড়ের রগের চেয়েও কাছে আছেন?

    প্রশ্নঃ ক্বুর’আনে বলা হয়েছে, "ফেরেশতারা এবং জিব্রাইল (আলাইহি সালাম)এমন এক দিনে আল্লাহর দিকে আরোহণ করে দুনিয়ার হিসেবে যা ৫০০০ বছরের সমান। এর মানে কি আল্লাহ দুনিয়ার যাবতীয় বিষয়াদি আরশের উপর বসে নিয়ন্ত্রণ করছেন? তাহলে কিভাবে আল্লাহ্‌ আমাদের ঘাড়ের রগের চেয়েও নিকটবর্তী ?”

    উত্তরঃ =সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

    কুর’আন, সুন্নাহ এবং সালাফদের ইজমা’ থেকে এটা প্রমানিত যে আল্লাহ আকাশের উপরে তাঁর আরশে সমাসীন, তিনি সুউচ্চ, সুমহান।তিনি রয়েছেন সব কিছুর উপরে এবং তাঁর উপরে কিছুই নেই। আল্লাহ বলেন(আয়াতের তর্জমা):

    " আল্লাহ যিনি নভোমন্ডল, ভুমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি আরশে বিরাজমান হয়েছেন। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক ও সুপারিশকারী নেই। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না”? [সূরা সাজদাহ ৩২:৪]

    "নিশ্চয়ই তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ যিনি তৈরী করেছেন আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে, অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি কার্য পরিচালনা করেন। কেউ সুপারিশ করতে পাবে না তবে তাঁর অনুমতি ছাড়া ইনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তোমরা তাঁরই এবাদত কর। তোমরা কি কিছুই চিন্তা কর না” ? [সূরা ইউনূস ১০:৩]

    "কেউ সম্মান চাইলে জেনে রাখুন, সমস্ত সম্মান আল্লাহরই জন্যে। তাঁরই দিকে আরোহণ করে সৎবাক্য এবং সৎকর্ম তাকে তুলে নেয়। যারা মন্দ কার্যের চক্রান্তে লেগে থাকে, তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি। তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ হবে”। [সূরা ফাতির ৩৫:১০]

    "তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত”। [সূরা হাদীদ ৫৭:৩]

    নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "আপনি সুউচ্চ এবং আপনার উপরে কোন কিছুই নেই...”

    এই ধরনের অর্থ বিশিষ্ট অনেক আয়াত এবং হাদীস রয়েছে। কিন্তু একই সাথে আল্লাহ এটাও বলেছেন যে তিনি তাঁর বান্দাদের সাথেই আছেন তারা যেখানেই থাকুক না কেনঃ

    "আপনি কি ভেবে দেখেননি যে, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, আল্লাহ তা জানেন। তিন ব্যক্তির এমন কোন পরামর্শ হয় না যাতে তিনি চতুর্থ না থাকেন এবং পাঁচ জনেরও হয় না, যাতে তিনি ষষ্ঠ না থাকেন তারা এতদপেক্ষা কম হোক বা বেশী হোক তারা যেখানেই থাকুক না কেন তিনি তাদের সাথে আছেন, তারা যা করে, তিনি কেয়ামতের দিন তা তাদেরকে জানিয়ে দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত”। [সূরা মুজদালাহ ৫৮:৭]

    আল্লাহ একটি আয়াতে একই সাথে তাঁর আরশের উপর থাকা এবং তাঁর বান্দাদের সাথে থাকার কথা উল্লেখ করেছেন, এই আয়াতে তিনি বলেছেন (আয়াতের তর্জমা):

    "তিনি নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়দিনে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেন। তিনি জানেন যা ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা ভূমি থেকে নির্গত হয় এবং যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় ও যা আকাশে উত্থিত হয়। তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন”।[সূরা হাদীদ ৫৭:৪]

    আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন এর মানে এই নয় যে তিনি আমাদের সাথে বাস করছেন; বরং এর অর্থ এই যে তিনি তাঁর জ্ঞানের মাধ্যমে তাঁর বান্দাদের সাথে আছেন (আল্লাহ তাঁর বান্দাদের অবস্থা সম্পর্কে সম্মক পরিজ্ঞাত), তিনি তাঁর আরশের উপর সমাসীন কিন্তু তাঁর বান্দাদের কর্মের কোন কিছুই তাঁর কাছ থেকে গোপন নেই। আল্লাহ বলেন(আয়াতের তর্জমা):

    "আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী।(আমার জ্ঞানের মাধ্যমে)”[সূরা ক্বাফ ৫০:১৬]

    -বেশিরভাগ মুফাসসিরীনদের মতে আল্লাহ নিকটে আছেন এর অর্থ হল, তিনি তাঁর ফেরেশতাদের মাধমে নিকটে আছেন যারা মানুষের কৃতকর্মের হিসাব লিপিবদ্ধ করে। আর কিভাবে আল্লাহ আমাদের নিকটবর্তী আছেন-এর ব্যাখ্যা যারা করেছেন তাঁরা বলেছেন যে ,আল্লাহ তাঁর জ্ঞানের মাধ্যমে তাঁর বান্দাদের নিকটবর্তী।

    -এটিই হচ্ছে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের দৃষ্টিভংগী যারা বিশ্বাস করেন যে আল্লাহ তার সমস্ত সৃষ্টির উর্ধ্বে অবস্থান করছেন কিন্তু একই সাথে তিনি তাঁর বান্দাদের সাথেও আছেন(তাঁর জ্ঞানের মাধ্যমে)।

    [মূলঃ শেইখ আব্দ আর-রাহমান আল-বাররাক] সম্পাদনাঃ শাইখ সালিহ আল মুনাজ্জিদ অনুবাদঃ সরল পথ